Header Ads Widget

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’

 জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’

সংবিধান প্রতিস্থাপন ও আ.লীগকে অপ্রাসঙ্গিক করা নিয়ে আলোচনা

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১: ৫০

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করা হবে

 আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর। এ বিষয় সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেয়ালে নতুন করে আঁকা হচ্ছে গ্রাফিতি, দেয়াললিখন। গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিববাড়ি এলাকায়

‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করা হবে আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর। এ বিষয় সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেয়ালে নতুন করে আঁকা হচ্ছে গ্রাফিতি, দেয়াললিখন। গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিববাড়ি এলাকায়ছবি: জাহিদুল করিম

জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ বর্তমান সংবিধানের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে বলে মনে করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা বাহাত্তরের সংবিধানকে ‘মুজিববাদী সংবিধান’ হিসেবেও উল্লেখ করেছে। এই ‘মুজিববাদী সংবিধান’ কীভাবে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষাকে বিনষ্ট করেছে এবং ঠিক কীভাবে এর রিপ্লেসমেন্ট (প্রতিস্থাপন) করা হবে, সেটি ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে’ স্পষ্ট করা হবে বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

৩১ ডিসেম্বর (আগামীকাল মঙ্গলবার) বেলা তিনটায় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই ঘোষণা সামনে রেখে গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকার বাংলামোটরে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের’ মাধ্যমে বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের ‘কবর’ রচিত হবে। পাশাপাশি এই ঘোষণাপত্রে ‘নাৎসিবাদী আওয়ামী লীগকে’ বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে—এমনটি প্রত্যাশা করছেন তাঁরা।


সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রটি ৫ আগস্টেই হওয়া উচিত ছিল। এটি না হওয়ার কারণে গণমাধ্যম, ‘বুদ্ধিজীবীপাড়া’সহ সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তিগুলো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে এবং এর লেজিটিমেসিকে (বৈধতা) প্রশ্ন করছে। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুজিববাদী সংবিধানের বিপরীতে মানুষ যে অবস্থান নিয়েছে, তার একটি লিগ্যাল ডকুমেন্টেশন (আইনগতভাবে নথিবদ্ধ রাখা) থাকা উচিত। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান ঘিরে তৈরি হওয়া গণ–আকাঙ্ক্ষা এবং বাহাত্তরের সংবিধানের বিপরীতে গিয়ে মানুষের রাস্তায় নামার প্রাতিষ্ঠানিক ও দালিলিক স্বীকৃতি ঘোষণা করার জন্য ৩১ ডিসেম্বর বেলা তিনটায় ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সেই ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা চাই বাহাত্তরের সংবিধান, মুজিববাদী চেতনা ও আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মানুষের দাঁড়ানোকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। আমরা চাই মুজিববাদী সংবিধানকে কবরস্থ ঘোষণা করা হবে। যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এক দফার (শেখ হাসিনার পতন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ) ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, ঠিক সেই জায়গা থেকে বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে। আমরা প্রত্যাশা রাখছি, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে নাৎসিবাদী আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি ঘোষণাপত্রে আমরা বিচার নিশ্চিতের ইশতেহার দেখতে চাই।’


পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতিগুলোর মাধ্যমে ভারতীয় আগ্রাসনের “ইনস্টলমেন্ট” (স্থাপন করা) হয়েছে। ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট করা হবে, মুজিববাদী সংবিধান কীভাবে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষাকে বিনষ্ট করেছে এবং ঠিক কীভাবে আমরা এটার রিপ্লেসমেন্ট করতে চাই।’

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ঘোষণা করার কোনো বিষয় আছে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘সেকেন্ড রিপাবলিক (দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র) আইনগত বিষয়। সেকেন্ড রিপাবলিকের বিষয়ে আমরা এখন যাচ্ছি না।’

এ সময় হাসনাতের পাশে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আমরা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ঘোষণা করব। সেটা সংবিধানে যুক্ত করে সেকেন্ড রিপাবলিক করার দায়িত্ব সরকারের।’


ঘোষণাপত্রের খসড়া ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দলের কাছে ঘোষণাপত্রের খসড়া পাঠানো হয়েছে।


সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমানে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রটি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের একটি লিখিত দলিল হিসেবে থাকবে। যে দলিল বিগত ব্যবস্থাগুলোকে বাতিল করে প্রত্যাশিত নতুন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পথ দেখাবে। ভবিষ্যতে ভোটের মাধ্যমে যাঁরা বাংলাদেশের মানুষের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এটি একটি নির্দেশিকা হিসেবে থাকবে।


সারজিস বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত অনুযায়ী ঘোষণাপত্রটি সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করা হচ্ছে।

৫ আগস্টের পুনর্মঞ্চায়নের পরিকল্পনা

বিএনপি নেতার প্রতিক্রিয়া’

Post a Comment

0 Comments